বেড়া,পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনার কাশিনাথপুর থেকে পাটগাড়ি পর্যন্ত মহসড়কের দুই পাশে অপরিকল্পিত ভাবে দীর্ঘদিন আগের লাগানো গাছ গুলো এখন অনেক বড় হয়েছে। সেগুলো দূর্বলকান্ডের হওয়ায় সামান্য বাতাসেই হেলে পড়ছে মহাসড়কের ওপর ফলে দিন দিন যানবাহন চলাচলে ব্যাপক ঝঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে এ সড়কটি। মাঝে মাঝেই চলন্ত গাড়ির ওপরে দূর্বল হয়ে হেলে থাকা সেই গাছ বা গাছের ডালপালা গুলি পড়ছে। এতে যানবাহনের সাথে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে মানুষ,ঘটছে ছোট বড় দূর্ঘটনা। জানা গেছে, কাশিনাথপুর থেকে পাটগাড়ি পর্যন্ত মহাসড়কের দৈর্ঘ প্রায় ২০ কিলোমিটার। ঢাকা-পাবনা এই মহাসড়কটি কিছুটা বেড়া উপজেলা ও অধিকাংশ সাঁথিয়া উপজেলাধীন।অংশটির পূর্ব দিকে রয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সেচখাল। সেখানে স্থাণীয় প্রভাবশালীরা লিজ না নিয়েই অবৈধভাবে কার্পজাতীয় মাছের প্রজেক্ট করেছেন।এই কার্পজাতীয় মাছ গুলো জলাসয়ের তলদেশ ও পাড় খুঁড়ে খাদ্য খোঁজ করে। তাতে দেখা গেছে জলাশয়ের পাড়ে গর্তের সৃষ্টি হয়ে এক পর্যায়ে পাড় ভেঙ্গে যাচ্ছে। এই মহাসড়ক সংলগ্ন চাকলা নামক স্থানের পূর্ব দিকের একটা অংশের পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। এতে মহাসড়কের পাশে লাগানো গাছগুলোর নিচের মাটি সরে গাছের গোড়ার ভিত্তি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে সামান্য বাতাসে বা ঝড়ে এসব গাছ দিন দিন হেলে পড়ে যাচ্ছে।এতে দুর্ঘটনা ঝুঁকি যেমন বাড়ছে তেমন ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে মহাসড়ক।আবার কিছু কিছু স্থানে দেখা গেছে গাছের মগডাল হেলে মহাসড়কের ওপর এসে রয়েছে। পাবনা থেকে ছেড়ে আসা ট্রাক চালক মনির হোসেন জানান, মহাসড়কের দুই পাশে অপরিকল্পিত ভাবে গাছ লাগানোর কারণে সামান্য বাতাসে বা বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি চালাতে হয় ভয়ে ভয়ে। আর এমনিতেই অনেক স্থানে গাছের ডাল এসে রয়েছে সড়কের ওপর।পাট বা ড্রাম লোড করলে অনেক উচু হয়।কিছু কিছু স্থানে রাস্তায় গাছের ডাল এসে থাকায় ডালে লেগে যায়। তিনি আরও জানান কয়েক দিন আগে নগড়বাড়ি থেকে পণ্যবোঝাই করে নিয়ে বগুড়ার দিকে যাচ্ছিলেন। আমাইকোলা পৌঁছালে হঠাৎ জোরে বাতাস শুরু হয়। কিছুটা যেতে না যেতেই ইউক্যালিপ্টাস(রেন্ডী কড়ই) গাছের একটি ডাল লুকিং গ্লাসের ওপর পড়ে ভেঙে যায়। যদি সামনের গ্লাসে পড়তো তাহলে বড় দূর্ঘটনার শিকারে পড়তেন।
বেড়া ও সাঁথিয়া উপজেলা বন কার্যালয় থেকে জানা যায়,২০০৩-৪ অর্থ বছরে মহসড়কের দুই পাশে বনজ ও ফলদসহ বিভিন্ন প্রজাতের গাছ রোপণ করা হয়েছিল। গাছ গুলো দেখভাল করার জন্য দুই উপজেলাতে ৪০ জন করে দুটি কমিটি করা হয়। সেই কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তা দেখভাল করেন। তবে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাশ্যপী বিকাশ চন্দ্র বলেন, মহসড়কের দুই পাশে বন বিভাগের গাছ থাকতে পারে আবার সড়ক ও জনপথ(সওজ) বিভাগের বা পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাছও থাকতে পারে।বিস্তারিত দেখে জেনে বলতে হবে। স্থানীয়রা বলছেন গাছগুলো রোপণ করার সময় পরিকল্পনায় কিছুটা ঘাটতি ছিল তাই এমন হচ্ছে।রাস্তার পাশে সেচখাল বরাবর দূর্বল কান্ডের গাছ বেশি লাগানো হয়েছে।আর বৃষ্টিতে গাছের গোড়ার মাটি সরে যাওয়ায় গাছ গুলো এ ভাবে পড়ে যাচ্ছে।মহাসড়কের ওপর গাছ পড়ে থাকলে যানজটেরও সৃষ্টি হয়। মহাসড়কের ওপর গাছ পড়ে থাকায় গেল বছর ছোনদাহ এলাকায় ঢাকাগামী যাত্রীবাহী কোচ ও ট্রাকের সংঘর্ষ হয় ।আর এ দূর্ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছিলেন। পাবনা সড়ক ও জনপথ(সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনসুর আহমেদ বলেন,কোথায় এমন হয়ে রয়েছে? কাশিনাথপুর থেকে পাটগাড়ি পর্যন্ত আপনার কাছে শুনলাম । সওজের জায়গায় থাকা ঝুঁকিপূর্ণ গাছসহ সকল কিছু অপসারণ করা হচ্ছে।আবার কিছু জায়গায় অপসারণের কাজ চলমান রয়েছে।মাছের চাষ বা গাছের কারণে সড়কের ক্ষতির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বেড়া পানি উন্নয়ন বোড(পাউবো) কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, পাউবোর জায়গা কাউকে লিজ দেওয়া হয়নি। কেউ পাউবোর জায়গা দখল করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply