নাজমুল হাসান-মাদারীপুর প্রতিনিধি:
পাতাঝরা বসন্তের বিদায় সন্নিকটে হওয়ায় উঁকি দিচ্ছে গ্রীষ্ম। এর মধ্যেই দেশজুড়ে বয়ে চলছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ।আর এই তীব্র এই গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সারাদেশের ন্যায় মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার জনজীবন। সূর্যের প্রখরতাপে সবচাইতে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষজন। এছাড়া তীব্র গরমে ধর্মপ্রাণ মুসলামানদের জন্য সিয়াম সাধনাও কঠিন হয়ে উঠেছে।আপাতত বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা না থাকায় সহসাই কাটছে না এমন পরিস্থিতি।
শনিবার (১৫ এপ্রিল) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থায় রয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।পর্যাপ্ত গাছ আর ছায়াযুক্ত স্থান না থাকায় রোদের উত্তাপ থেকে রেহাই মিলছে না। রোজাদারদের শুষ্কতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে এই কাঠ ফাটা রোদ।কারণ হিসেবে গণহারে বৃক্ষ নিধনকেও দায়ী করছেন অনেকে।
কথা হয় পথচারী আবির হাসানের সঙ্গে।তিনি বলেন, রোদের তাপ যেন গায়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে।ইতিপূর্বে এতোটা গরম মনে হয়নি।
ডাসার বাজারের কাঁচামাল বিক্রেতা রহিম মিয়া বলেন, এই গরমে রোজা রাখতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে। দুপুর ১২টার মধ্যেই গলা শুকিয়ে যায়।এরপর সারাদিন পার করা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
ভ্যানচালক জহির বলেন,এই গরমে ভ্যান চালাতে গিয়ে জীবন বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। গরমের জন্য রোজাও রাখা সম্ভব হচ্ছে না। একটু বৃষ্টি হলে অনেক ভালো লাগত।
রাস্তার পাশে গাছের ছায়ায় বসে থাকা বয়োবৃদ্ধ সোবহান মিয়া(৮০) বলেন,রোদের তাপেই তো শরীর দুর্বল হয়ে যায়।বিদ্যুৎও থাকে না মাঝে মাঝে।তখন ঘরে থাকা যায় না।গাছের ছায়ায় কিছুটা ভালো লাগে।
এদিকে তীব্র গরমে রাস্তার পাশের শরবতের দোকানগুলোতেও মোটামুটি ভিড় লেগে আছে। তীব্র গরমে তৃষ্ণা মেটাতে কেউ কেউ ঠান্ডা শরবতও পান করছেন।
ডাসারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ আশরাফুল আলম লাহিদ।বিভিন্ন ব্যবসায়ের পাশাপাশি আছে তার একাধিক মুরগীর খামার।আলাপকালে তিনি জানান,তীব্র গরমে প্রায় প্রতিদিন-ই শতকরা ২০% মুরগী মারা যাচ্ছে।ফলে,আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হতে হচ্ছে।
এছাড়া তীব্র এই গরমে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন কৃষকেরাও।
ধানের জমিতে কাজ করতে আসা কৃষক নাঈম মুন্সী বলেন, কাঠ ফাটা এই রোদে দাঁড়িয়ে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছি প্রায়। আশপাশে যে কোথাও বসব তেমন উপায়ও তো নেই।বৃষ্টি না হলে এই গরম কাটবে বলে মনে হচ্ছে।
তবে এখনই বৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
Leave a Reply