নিউজ ডেস্ক:-
যারা মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়েছে, সেসব সন্তানের প্রতি ধিক্কার জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
রোববার (৮ মে) রাজধানীর তোপখানা রোডে সিরডাপ মিলনায়তনে ‘মা দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘মা-বাবা বৃদ্ধ হলে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেওয়ার সামাজিক যে ব্যবস্থা ইউরোপে আছে, সেটি আমাদের দেশে হতে দেওয়া সমীচীন হবে না। যারা মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়েছে, তাদেরকে ধিক্কার।’
‘গরবিনী মা’ শীর্ষক এ সম্মাননা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ইউনিভার্সেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
সম্মাননা পাওয়া মাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা অনেক কষ্ট করেছেন বলেই আপনাদের সন্তানরা আলোকিত মানুষ হয়েছে, দেশকে অনেক কিছু দিয়েছে, সমাজকে কিছু দিতে পারছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে দেখা যায়, অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষ তাদের মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিচ্ছে। এটি প্রচণ্ড পীড়াদায়ক, যেটা আমি কখনো মেনে নিতে পারি না।’
‘এজন্য আমার কাছে যখন কোনো প্রস্তাব আসে বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করার, আমি সেটির বিরোধিতা করি। কারণ, বৃদ্ধাশ্রম তৈরি করলে আরও কিছু মা-বাবাকে সেখানে পাঠিয়ে দেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। এটি কতটুকু সঠিক, আমি জানি না। তবে, আমি বিরোধিতা করি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার মা-বাবার ভরণপোষণের জন্য বিশেষ আইন করেছে। মা-বাবাকে যদি ভরণপোষণ করা না হয়, সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করার আইন করা হয়েছে। সেই আইনের সুযোগ নিয়ে অনেকে মামলাও করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় এটি হয়েছে।’
পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ ধরে রাখার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা ইউরোপ-আমেরিকার চেয়ে অনেক গরিব হলেও আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধে আমরা ইউরোপ-আমেরিকার চেয়ে অনেক ধনী। কিন্তু, দেখা যাচ্ছে, উন্নয়নের সাথে সাথে আমাদের পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধগুলো ক্ষয়ে যাচ্ছে।’
‘শুধু বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে একটি উন্নত দেশ গঠন করা সম্ভব নয়। বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি মানুষের আত্মিক উন্নয়ন প্রয়োজন। আমাদের যে পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ আছে, সেগুলো সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।’
বিশ্ব মা দিবসে সব মা ও বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘একজন মা সন্তানকে মানুষ করার জন্য যে কষ্ট করে, সেটা অন্য কেউ করে না। মায়ের ভালোবাসার সাথে অন্য কিছুর তুলনা হয় না। একটি আলোকিত জাতি গঠন করতে আলোকিত মা প্রয়োজন।’
মন্ত্রী নিজের মা-বাবার স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘আমার বাবা যখন মারা যান, তখন আমার মন্ত্রিত্বের দুই বছর। তখন আমি পরিবেশমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছিলাম। পৃথিবীর যেখানেই থাকতাম না কেন বাবাকে প্রতিদিন ফোন করতাম। যেদিন আমার বাবা মারা গেলেন, তখন মনে হলো, আমার ওপর থেকে ছাতা সরে গেছে।’
Leave a Reply