হৃদয় হোসাইন,প্রতিবেদক:
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা মার্কা প্রতিক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক হারুন অর-রশীদ নির্বাচন করে। নৌকার বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আনারস মার্কা প্রতিক নিয়ে নির্বাচনে বিজয় অর্জন করেন হাফিজুর রহমান। নির্বাচনকালীন উৎসবমুখর বিরোধীতা ও সহিংসতা রুপ নিয়েছেন বছরব্যাপী সহিংসতায়। কোনো ভাবেই দমন হচ্ছে না দুই পক্ষের সহিংসতা। গ্রুপিং দ্বন্দ্বে দীর্ঘদিন সোনাতলা গ্রামের ছাড়া প্রায় এক হাজার মানুষ গ্রাম ছাড়া। এদিকে মতিন হত্যা মামলায় প্রথমে বর্তমান চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান কে আটক করা হয়। হাফিজুর রহমান জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর মতিন হত্যা মামলায় সাবেক চেয়ারম্যানের ভাই জুয়েল কে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক করে সি আই ডি। ২৯/০৭/২০২৩ তারিখে সাঁথিয়া প্রেস ক্লাবে জুয়েলের বিপক্ষে বক্তব্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মতিনের পরিবার। জুয়েল জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর নিহত মতিনের স্ত্রী এবার জুয়েলের পক্ষে ২০/০৮/২০২৩ তারিখে সাঁথিয়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ নিয়েও নতুন প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় কারো কোনো কিছু না হারালেও স্বামী হারিয়েছেন আজিরন খাতুন। পিতা হারিয়ে আদর থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মতিনের অসহায় সন্তানরা। জানা যায় চলতি বছর শুক্রবার ৪ আগস্ট সকালে সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর-রশিদের উপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে দুই পায়ে ও শরীরে ব্যাপক আহত করেছেন একদল দুষ্কৃতিকারী,এখন ও চিকিৎসাধীন আছেন। একাধিকবার তার বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। আবার বর্তমান চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান হাফিজকে অপহরণ মামলায় আটক করে পুলিশ। ১২ আগষ্ট শনিবার দিবাগত রাত ১২টায় অপহরণের অভিযোগে মামলা করেন অপহৃত যুবলীগ নেতা নান্নু। ওইদিন রাত্রি আড়াইটার দিকে থানা পুলিশ হাফিজুর রহমানকে তার এক আত্মীয়র বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেন। অপহরণ এ মামলার বাদী অপহৃতা নিজেই। তিনি একই ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামের আনসার শেখের ছেলে। অপহরণ মামলায় জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরও গ্রামের বাড়ি ও পরিষদ কার্যালয়ে আসেন না নির্বাচিত চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান। সব মিলিয়ে সেখানকার জীবন জীবিতায় মানুষের মাঝে ব্যাপক ভয় ভীতি বাসা বেধেছে। নির্ঘুম রাত্রি যাপন করছেন খেটে খাওয়া সাধারণ জনগণ। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে,শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারছে না। প্রতিনিয়ত কারো না কারো বাড়িতে হামলা লুটপাটের ঘটনা ঘটেই চলছে।
ইউনিয়নের কয়েকজন সচেতন ব্যাক্তির সাথে কথা বললে তারা বলেন, সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের গুরু পিং মারামারি দ্বন্দ্ব ইউনিয়নের উন্নয়ন সহ শিক্ষা ব্যবস্থার উপর এক সময় বিরূপ প্রভাব ফেলবে। প্রায় এক হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে গরু বাছুর নিয়ে আত্মীয়র বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। এভাবে কত দিন ভিটে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে থাকবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তো একটা দায়িত্ব আছে মানুষকে নিরাপদে বসবাস করার ব্যবস্থা করার। আমরা চাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে দুই পক্ষকে নিয়ে বসে স্বল্প সময়ের মধ্যে সকলের শান্তিপূর্ণ বসবাসযোগ্য একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হোক।
এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজুর রহমান বলেন, নাগডেমড়া বাসী হারুন বাহিনীর অত্যাচার জুলুমের হাত থেকে মুক্তি ও উন্নয়নের জন্য আমাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছে। প্রতিপক্ষের হামলা মামলার ভয়ে আমার পক্ষের প্রায় এক হাজার নারী পুরুষ সহ অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে জীবন যাপন করছেন। আমার কর্মী সর্মথকের নামে অসংখ্য মিথ্যা হয়রানি মূলক মামলা দেওয়া হয়েছে। আমার সাথে যে থাকবে তাকেই হয়রানি করতে মামলা করার ঘোষণা দিয়েছেন। অসংখ্য নারী পুরুষকে মারধর রক্তাক্ত আহত বাড়িঘর ভাংচুর করা হয়েছে তাদের অপরাধ তারা হাফিজ চেয়ারম্যান কে ভালোবাসে সর্মথন করেন। আমাকে সর্মথন করে আমার যারা নেতাকর্মী আছেন হারুন বাহিনী খুজছে মারার জন্য। এসএসসি এইচএসসি পরীক্ষার্থী অনেকে সঠিক মতো বাড়িতে থেকে পড়াশুনা করতে পারছে না। গ্রাম পুলিশ সাগর ও মামুন কে মারধর করে ভয় দেখিয়েছেন হারুন বাহিনী। এমন অবস্থায় আমি এলাকায় যাবো। আমি কয়েক দিনের মধ্যে এলাকায় যাবো। গ্রাম পুলিশ সচিব আমার কাছে কাগজ নিয়ে আসেন আমি স্বাক্ষর করে দেই। এভাবেই চলছে পরিষদের কার্যক্রম। আমি চাই ইউনিয়ন বাসীর উন্নয়ন ও শান্তি এর জন্য যা যা করার দরকার আমি তাই করবো। আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করে বাহিনীর কাছে আমাদের দাবি যে মানুষ গুলো গ্রাম ছাড়া তাদের স্বল্প সময়ের মধ্যে গ্রামে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হোক।
সাবেক চেয়ারম্যান হারুন অর-রশিদ বলেন কেনো কোন কারণে কিসের ভয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান এলাকায় আসেন না এবিষয়ে আমি কিছুই জানি না। হয়তো এমন কোনো গুরুতর অপরাধ সে করছে যার ভয়ে এখন এলাকায় আসে না। এক হাজার কি কত মানুষ গ্রামে নেই এ বিষয় কিছু বলতে পারবো না। তারাও নিশ্চয়ই কোনো অপরাধ করেছেন সেই ভয়ে গ্রাম ছাড়া হয়েছে হয়তো।
এ বিষয় মুঠোফোনে আরো জানতে সাঁথিয়া থানার অফিসার ইর্নচাজ রফিকুল ইসলাম কে কল করলে তিনি বলেন এ বিষয় আমি কিছু জানি না। সবাই তো এলাকায় যদি কেউ এলাকায় না আসতে পারে আমাকে জানাবেন বলে জানান।
Leave a Reply