হৃদয় হোসাইন,প্রতিবেদক:
ইছামতি,হুরাসাগর আর যমুনার সঙ্গমস্থল তীরবর্তী বেড়া বন্দরটি বাংলার সুলতানী আমলে প্রতিষ্ঠিত বলে জনশ্রুতি রয়েছে।আরো একটি জনশ্রুতি রয়েছে যে বেড়ার পূর্বনাম ছিল শম্ভুপুর।খ্রীস্ট জন্মের পূর্বহতে উত্তরবঙ্গের নদ-নদীর সঙ্গমস্থল হিসেবে শম্ভুপুর ব্যাপক পরিচিত ছিল।এই শম্ভুপুরে তাই গড়ে উঠেছিল জনবসতি।নৌপথে জলদস্যুদের আক্রমণ আর প্রমত্তা নদীর উত্তাল স্রোত পেরিয়ে বেড়ার নিকটবর্তী হলেই তারা নিজেদের নিরাপদ ভাবতো।একারণে বেড়া নিরাপদ পোতাশ্রয়ের উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায়। ফারসী ভাষায় (কারো কারো মতে আরবী ভাষায়) ‘‘বেডুহা’’ শব্দের অপভ্রংশ হচ্ছে ‘বড়া’। যতদূর জানা যায় ৮০০ খ্রিস্টাব্দের গোড়ার দিকে আরব বণিকেরা বেড়া’য় তাদের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে তোলে।আবার সুলতানী শাসনামলে একবার আরব দেশে ভয়ঙ্কর এক দুর্ভিক্ষ হয়।সেই দুর্ভিক্ষের সময় এই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল হতে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করে আরব বংশোদ্ভুত সুলতানি গিয়াস উদ্দিন আযম শাহ বেড়া বন্দরের মাধ্যমে আরবদেশে পাঠিয়েছিলেন।স্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী শাসনামলে জলদস্যু নিয়ন্ত্রণে যমুনার পূর্ব উপকুলে প্রশাসনিক থানা ‘মথূরা’ স্থাপন করা হয়। মথুরা থানা যমুনার করালগ্রাসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেলে যমুনার পশ্চিম উপকুলে বেড়া নামক স্থানে থানাটি পুনঃস্থাপিত হয়।দেশ বিভাগের পর ১৯৬০ সালে বেড়া’র উন্নয়ন সার্কেল হিসেবে কার্যপরিধি অনেক বেড়ে যায়।১৯৮৩ সালের ১৫ এপ্রিল বেড়া থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়।
বেড়া উপজেলার উত্তরে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলা ও চৌহালী উপজেলা,দক্ষিণে রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ ঘাট এবং রাজবাড়ি সদর উপজেলা,পুর্বে সিরাজগঞ্জের চৌহালি এবং মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর ও শিবালয় উপজেলা,পশ্চিমে পাবনা জেলার সুজানগর ও সাঁথিয়া উপজেলা।ভৌগলিক অবসহা বিবেচনা করলে দেখা যায়,বেড়া উপজেলার মোট ভূ-ভাগের ৭০%নদীতীর।অনেক গুণীব্যাক্তির জন্য এ উপজেলায়।পদ্মা, যমুনা,হুরাসাগর,ইছামতি,আত্রাই নদী,আর ধলাই,নান্দিয়ারা,মাসুমদিয়া বিলের সাথে এই এলাকার মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সম্পৃক্ত রয়েছে।নৌ পরিবহণ, মৎস্য আহরণ ছিল বেড়ার মানুষের মুল পেশা।নিরাপদ নৌঘাট হওয়ার কারণে যুগের পর যুগ ধরে বেড়া হয়েছে উঠেছিল সোনালী আঁশ- পাটের প্রখ্যাত ব্যবসা কেন্দ্র।জনশ্রুতি রয়েছে যে, পাট কেনার জন্য ব্রিটেন থেকে সরাসরি বিমান এসে নামত নাকালিয়া সংলগ্ন যমুনা নদীতীরে। তখন যমুনা তীরবর্তী নাকালিয়া,কৈটোলা, রাকসা, পাইখন্দ, পেঁচাকোলা,নগরবাড়ী, কাজিরহাট, খানপুরা, নটাখোলা অন্যতম ব্যবসায়িক কেন্দ্র হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিল।কালের পরিক্রমায় অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে এসেছে নানা বৈচিত্র।পাট ব্যবসার সোনালী সেই দিন নেই,পাটের বড় বড় গুদাম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে।তবে কাশীনাথপুর এবং বেড়া কেন্দ্রিক নতুন অর্থনৈতিক কর্মকান্ড শুরু হয়েছে।তাঁত শিল্প এই উপজেলার অন্যতম কুটির শিল্প।প্রায় ২৫%জনসংখ্যা তাঁত শিল্প তথা উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং এর সঙ্গীয় পেশার সাথে সম্পৃক্ত। বেড়া পাম্প হাউজের সেচ প্রকল্পের কারণে কৃষিকাজ আর মৎস্যচাষ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। হাস-মুরগী পালন, গাভীপালন দুগ্ধ উৎপাদন ও তার বাজারজাত করণ একটি নতুন শিল্প পৌরসভা পাবনা-১ আসনের হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। উপজেলার প্রখ্যাত যারা এয়ার ভাইস-এ.কে খন্দকার, মাননীয় পরিকল্পনা মন্ত্রী (সাবেক) অধ্যাপক আবু সাইদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী।ডেপুটি স্পিকার,এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু সংসদ সদস্য-৬৮,পাবনা-১,সাবেক বিদ্যুত ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।মির্জা আ:জলিল। মির্জা আ: আওয়াল, সাবেক সংসদ সদস্য। মেজর মনজুর কাদের,সাবেক সংসদ সদস্য এর জন্ম এ উপজেলায়।উপজেলার ২৪৮.৬০ বঃকিঃমিঃ আয়তনে রয়েছে।নির্বাচনী এলাকা দুটি (পাবনা-২ এর জন্য ৫টি ইউনিয়ন এবং বাকী ইউনিয়ন আহমেদ ফিরোজ কবির - সংসদ সদস্য-৬৯,পাবনা-২।সরকারী হাসপাতাল ১টি (৫০ শয্যার)পোস্ট অফিস ১৩টি নদ নদী পদ্মা, যমুনা, ইছামতি, হুরাসাগর। হাট-বাজার ১৭ টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস ৭টি,রেস্ট হাউজ ২টি ডাকবাংলো ১টি।বেড়া পৌরসভা স্থাপিতঃ হয় ১৭-০৪-১৯৮৮ ইং সালে।আয়তনঃ- ২০.৫০ বর্গকিলোমিটার।’ক’ শ্রেণীতে উন্নীতঃ-২১-১১-২০০৪ ইং।মোট মহল্লার সংখ্যাঃ- ৩২ (বত্রিশ) টি ।মোট ওয়ার্ড সংখ্যাঃ-১০ (দশ)টি।মোট মৌজার সংখ্যাঃ-১৬ (ষোল) টি।উপজেলাধীন আমিনপুর পুলিশ ফাঁড়ি এখন পূর্ণাঙ্গ থানা। ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে জেলার এক কোনো দাঁড়িয়ে আছে আমাদের বেড়া।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : সোনারগাঁও শপিং কমপ্লেক্স ৪র্থ তলা, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা, সোনারগাঁ, নারায়ণগঞ্জ।
প্রকাশক
ও সম্পাদক: মোঃ ইমরান হোসেন
মোবাইল
: 01822219555
মেইল
: emranhossain9555gmail.com
বার্তা
সম্পাদক : মোঃ পারভেজ হোসেন
মোবাইল
: 01826178999
মেইল : parvezoks@gmail.com
Copyright © 2023 দেশ প্রকাশ. All rights reserved.