নিউজ ডেস্ক:-
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমাকে সংস্থাটির আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল করা হয়েছে। পাশাপাশি তাকে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি), ভূবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ(এলএলডিসি) ও উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর(এসআইডিএস) উচ্চ প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস তাকে এসব পদে নিয়োগ দেন।
রাবাব ফাতিমা বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসের প্রথম নারী কূটনীতিক যিনি জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেলেন। একই পদে ২০০২ সালের নিয়োগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশের আনোয়ারুল করিম চৌধুরী। বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসের নারী হিসেবে রাবাব ফাতিমা এই পদে প্রথম হলেও বাংলাদেশ থেকে দ্বিতীয় কূটনীতিক।
নিয়োগের বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের ঘোষণার পর এক প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি আমাকে এ সুযোগ করে দিয়েছেন। আমার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে তিনি আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন। আমি জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি কৃতজ্ঞ। স্বল্পোন্নত দেশ, ভূবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ ও উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রসমূহের উচ্চ প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আমার ওপর যে গভীর আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করেছেন, আমি কাজের মাধ্যমে তার প্রতিফলন দেখাতে চাই।’ ২০১৯ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে রাবাব ফাতিমা জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সিভিল সার্ভিসে তার আছে দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময়ের অভিজ্ঞতা। এর আগে তিনি জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হয়ে কাজ করেছেন।
রাবাব ফাতিমা জাতিসংঘ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনের সভাপতি, ইউএন উইমেন এক্সিকিউটিভ বোর্ড প্রেসিডেন্ট এবং ৭৬তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সহ-সভাপতির মতো মর্যাদাপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এলডিসি-৫ এর প্রস্তুতিমূলক কমিটির কো-চেয়ার, ইউনিসেফ এক্সিকিউটিভ বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ও ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ এবং ইউএনওপিএসের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
পেশাদার কূটনীতিক রাবাব ফাতিমা ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসে যোগ দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকসহ কলকাতা ও বেইজিংয়েও বাংলাদেশে কূটনীতিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মানবাধিকার বিষয়াবলিতে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার রয়েছে ব্যাপক অভিজ্ঞতা। লন্ডনস্থ কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটে মানবাধিকার বিভাগের প্রধান, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রতিনিধি এবং একই সংস্থার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিবাসন বিষয়ক আঞ্চলিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতাও রয়েছে এই কূটনীতিকের।
ফাতিমা টাফ্টস ইউনিভার্সিটির ফ্লেচার স্কুল অফ ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামাজিক বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে রাবাব ফাতিমা এক কন্যা সন্তানের জননী। তার জীবনসঙ্গী কাজী ইমতিয়াজ হোসেনও পেশাদার কূটনৈতিক।
Leave a Reply