আটকৃত মাদক ব্যবসায়ী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার দুই উপ পরিদর্শক কে (এসআই) পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছেন বলে রিমান্ডে থাকাবস্থায় সোনারগাাঁ থানা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে মাদক ব্যবসায়ী আলমগীর।
আটকের পর ওই মাদক ব্যবসায়ীকে চালকের আসনে বসিয়ে প্রথমে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যান দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। সেখান থেকে শেষে থানায় আনার সময় আসামিকে আবারও গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয় ।
দুই দারোগার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনকে চার দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নারায়ণগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলমের আদালতে হাজির করা হলে কারাগারের পাঠানোর আদেশ দেন বিজ্ঞ বিচারক।
শুকবার (৪ ফেব্রুয়ারী) বিকেল আাদলেতের আদেশের প্রেক্ষিতে আসামী আলমগীর হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর মোহাম্মাদ আসাদ।
মামলার বিবরণে প্রকাশ, গত ১৭ জানুয়ারি সোনারগাঁয়ে আসামিসহ ব্যক্তিগত গাড়ি খাদে পড়ে দুই এসআই নিহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২১ জানুয়ারী একটি হত্যা মামলায় এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। ওই ঘটনার সময় আসামি গাড়ি চালাচ্ছিলেন কি না, তা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি। আদালত থেকে মামলার এজাহার সংগ্রহ করে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ ঘটনায় গত বুধবার সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক ( তদন্ত ) শফিকুল ইসলাম ও এএসআই রফিকুল ইসলামকে বদলি করা হয়েছে।
সেদিন খাদে পড়া গাড়িতে রফিকুল ছিলেন। নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান বদলির তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এটি নিয়মিত বদলির অংশ বলেই দাবি করেন তিনি। সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বাদী হয়ে করা মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে ।
গত ১৭ জানুয়ারি ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকা থেকে ৪২ হাজার ইয়াবা বড়িসহ গ্রেপ্তার হন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বাঁশখালিয়া গ্রামের মো. তৈয়ব আলীর ছেলে মো. আলমগীর (৩০)। তাঁকে (আসামিকে) পুলিশ সদস্যরা গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দিয়ে প্রথমে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে মাদকসহ আসামিকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন হয়।
সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় ও পুলিশ সদস্যরা গাড়ি চালাতে না পারার কারণে সেই গ্রেফতারকৃত আসামি আলমগীরকে দ্বিতীয় দফায় আবারও গাড়ি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। আসামি সোনারগাঁ থানা থেকে মাত্র ৫০০ মিটার দূরে থাকা অবস্থায় পরিকল্পিতভাবে গাড়ি খাদে ফেলে দুই এসআই কাজী সালেহ উদ্দিন ও শরীফুল ইসলামকে হত্যা করে পালিয়ে যান। ঘটনার আট দিন পর পলাতক আসামি আলমগীরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ।
ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানতে একাধিকবার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( খ সার্কেল ) শেখ বিল্লাল এবং সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমাননের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করলেও কেউ ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নাই।
Leave a Reply